ফিরে এসো স্বাধীনতার অমর কবি – মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম

সম্পাদনা/লেখক: ইফতেখার মোহাম্মদ

 

এই বঙ্গের কাছে, এই ধরিত্রী মাতার কাছে আমি ঋণী,
এই বঙ্গমাতা দিয়েছে মোদের বিদ্রোহী কবি নজরুল,
ভারতবর্ষ জুড়ে দিয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, মধুসূদন,
সুকান্ত, জসীমউদ্‌দীন, শামসুর রাহমান,
আরও কত কবি সাহিত্যিক কত দেশপ্রেমিক।
বঙ্গ প্রেম আমদের শিখিয়েছে রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনতে ভাষার অধিকার
একুশ পেরিয়ে লাখো আত্মার আত্মাহুতির বিনিময়ে স্বাদ পেয়েছি স্বাধীনতার।
হে বঙ্গমাতা আমি ঋণী তোমার কাছে, তুমি জন্ম দিয়েছ এমন এক কবি
এমন এক রূপকার, এমন এক স্বপ্নদ্রষ্টা,

যার তর্জনীর ইশারায় দুলেছে তোমার বঙ্গবাসী
দেখেছে একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন, যার কথায় ছিল বাংলা, বাংলাদেশ।
হে বঙ্গমাতা তোমার কোলেতে বেড়ে উঠেছে, স্বাধীনতার অমর কবি
লাখ জনতার মাঝে যিনি শুনিয়েছিলেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
এ কয়েকটি চরণের চেয়ে শ্রেষ্ঠ চরণ কবিতায়,
আর কী থাকতে পারে, আমি আজও খুঁজে পাইনি।
দেশের জন্য স্বাধীনতার জন্য কবি কাটিয়েছেন কত সময় অন্ধকার সেলে,
এক আঙুলের ইশারায় এক বজ্রকণ্ঠের আওয়াজে
লাখো মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুক্তির সংগ্রামে
এসেছে স্বাধীনতা, স্বপ্নের হয়েছে পূরণ,
পেয়েছি ঠিকানা, পেয়েছি দেশ, আজকের বাংলাদেশ।
ক্ষমা করো স্বাধীনতার অমর কবি,
আমরা এমন নিমকহারাম, কেড়ে নিয়েছি তোমার প্রাণ,
তোমার স্বপ্নের বাংলাদেশ আজও অনেক স্বপ্ন গেছে, স্বপ্নের মাঝেই
তোমার নাম, তোমার নীতির বিসর্জন হয়,
তোমার আদর্শে করতে চায় কালিমা লেপন।
হে আমার নেতা
যে বাংলা মায়ের ইজ্জত রক্ষায় ছুটেছিলে বিশ্বময়
টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, জৈন্তা থেকে খাসিয়া
সে মাকে আজ খাবলে খাবলে খেতে চায়
শকুনের দল, তোমার শত্রুরা বাংলার মাটিকে করতে চায় শাসন।
হে স্বাধীনতার কান্ডারি,
সাধারণ-অসাধারণ, কামার, কুলি কৃষক জনতা
সবাই দিয়েছে জীবন বিসর্জন তোমায় ভালোবেসে
এ দেশকে ভালোবেসে লক্ষ প্রাণ ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুক্তির যুদ্ধে,
তবু আজ দেখি সোনার বাংলায় রেডিমেড মুক্তিযোদ্ধা
হে মহানুভব জাতির পিতা দয়া ছিল তোমার,
করে নিতে কন্যা নয়তো পুত্র, তুমি ছিলে দয়ার সমুদ্র।
আমার প্রাণের কবি
ফিরে এসো এই বাংলায় দিশেহারা জাতির তোমাকে বড় প্রয়োজন,
ফিরে এসো বিজয়ের দিনে দেখে যাও কেমন চলছে আজকের বাংলাদেশ।
ফিরে এসো হে বাংলাদেশি জাতির পিতা
লাল সবুজের পতাকা ডাকছে তোমায়, দেখে যাও তোমার কন্যার লাল সবুজের বিশ্ব জয়।
পিতা আমার অসময়ে হারিয়েছি তোমায়, আমি দেখিনি তোমায়
তবু কেন আমার কানে ভাসে খুনির বুটের শব্দ, ব্রাশ ফায়ারের আওয়াজ
মাঝে মাঝে আমি স্বপ্নে দেখি তোমায়, পাইপ হাতে অভিমানী দৃষ্টিতে দেখছ আমায়।
দুশমন গড়তে দিল না যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে,
তোমার খুনিরা আজও বসতে চায় তোমার স্বপ্নের বাংলার ক্ষমতায় লুটে পুটে কুক্ষিগত করতে চায়।
ওহে স্বাধীনতার বাঁশিওয়ালা ওহে স্বাধীনতার কবি,
ওপার থেকে লেখ না আরেকটি মুক্তির কবিতা, আরেকটি স্বাধীনতার কবিতা।
তুমি থাকতে চারপাশে রেখেছিলে বেইমান চাটুকারের দল, আজও রয়ে গেছে তেমনি,
বদলায়নি, রং পাল্টেছে ঢং পাল্টেছে সিংহাসন, মসনদে আসে আলু পটল ব্যবসায়ী, চেতনার ধ্বজাধারী
কত শত মৌসুমি নেতা, কত রাজা ধীরাজ
ক্যান্টনমেন্ট থেকে এসেছে ক্ষমতায়, হয়েছে স্বৈরাচার, দেশদ্রোহীরা হাঁকিয়েছে পতাকাশোভিত গাড়ি।
ফিরে এসো স্বাধীনতার অমর কবি,
স্বাধীন দেশের পরাধীনতা থেকে আরেক বার মুক্ত করো দেশ
ফিরে এসো মুক্তির বাঁশিওয়ালা বাজাও মুক্তির সুর, ফিরে এসো কবি তোমার কণ্ঠে একবার বলো
এবারের সংগ্রাম গণতন্ত্রের সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম দুর্নীতি মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম গুম খুন বন্ধের সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম নতুন দিনের সুন্দর আগামীর সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম শান্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম বেঁচে থাকার সংগ্রাম,
ফিরে এসো স্বাধীনতার অমর কবি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।

 

আরও পড়ুন