শেখ রাসেল। মাত্র ১১ বছর বয়সের এই শিশুর অসহায় আকুতি একটু নরম করতে পারেনি পঁচাত্তরের নির্মম ঘাতকদের হৃদয়। চোখের সামনে বাবা, মা, দুই বড় ভাই, দুই ভাবির বুলেটবিদ্ধ রক্তাক্ত দেহ লুটিয়ে পড়তে দেখে শিশু রাসেল বাঁচতে চেয়েছিল, বলেছিল, ‘আমাকে মেরো না’ – কিন্তু তার এই কথা কানে তোলেনি ঘাতকদল। তারা ছিল কাণ্ডজ্ঞান রহিত, বিবেকবুদ্ধি শূন্য, বেপরোয়া। তাই শুধু রাষ্ট্রপিতাকে নয় শিশু রাসেলসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছিল। সেদিনও রাত ভোর হয়েছিল, কিন্তু ১৫ আগস্ট, পঁচাত্তরে বাংলাদেশে দিনের আলো ছিল রাতের আঁধার থেকেও অধিক অন্ধকারময়। সেই অন্ধকার দূর করে দেশের বুকে আলো ফোটাতে অনেক সময় লেগেছে, বলা যায়, এখনও সে আঁধার কাটেনি এখনও পুরোপুরি। শিশু হত্যার মতো গর্হিত অপরাধ জাতির কপালে যে কলঙ্কের দাগ লেপে দিয়েছে, তা কি এতো সহজে মুছে ফেলা যায়?
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর রাত দেড়টায় জন্ম হয়েছিল রাসেলের। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতেই হলো তার ছোট্ট জীবনের চির অবসান। ঘাতকের তপ্ত বুলেট শিশু রাসেলের কোমল শরীরটি ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। এই নিষ্ঠুরতা অসহনীয়,, মেনে নেওয়ার মতো নয়। অথচ আমরা তা মেনে নিয়েছি, ঘাতকদের মোকাবিলায় সাহসের পরিচয় দিতে পারিনি। এটা আমাদের সমবেত লজ্জা এবং গ্লানি।