Bangabandhu Online ArchiveBangabandhu Online ArchiveBangabandhu Online ArchiveBangabandhu Online Archive
  • মূল পাতা
  • বঙ্গবন্ধু
    • এক নজরে
    • জন্ম ও বেড়ে ওঠা
    • মুক্তি সংগ্রামে
      • ভাষা আন্দোলন
      • ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬
      • আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ১৯৬৮
      • ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান
      • ১৯৭০ এর গণনির্বাচন
      • ১৯৭১
        • জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি
        • ২রা মার্চ
        • ৭ মার্চের ভাষণ
        • উত্তাল মার্চ
        • ২৫শে মার্চ
        • স্বাধীনতার ঘোষণা
        • মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু
        • পাকিস্তান কারাগারে বঙ্গবন্ধু
    • হত্যাকাণ্ড
    • শাসনামল
      • অর্থনীতি
      • কৃষিক্ষেত্র
      • স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
      • নবরাষ্ট্র পুনর্গঠন
      • অর্থনীতি
      • পররাষ্ট্র নীতি
      • সামরিক ক্ষেত্র
      • বাকশাল
      • বিবিধ
    • পরিবার
      • বঙ্গ মাতা
      • শেখ হাসিনা
      • শেখ কামাল
      • শেখ জামাল
      • শেখ রেহানা
      • শেখ রাসেল
      • এম এ ওয়াজেদ মিয়া
      • সজীব ওয়াজেদ জয়
      • সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
      • রাদোয়ান মুজিব সিদ্দিক
      • টিউলিপ সিদ্দিক
    • অর্জন ও স্বীকৃতি
    • ভাষণ
    • রচনা সমূহ
    • বঙ্গবন্ধু বিরোধী ষড়যন্ত্র
    • বিষয়ভিত্তিক
      • শিশুবন্ধু বঙ্গবন্ধু
      • বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও দর্শন
  • প্রকাশনা
    • গ্রন্থাবলি
    • রচনা ও নিবন্ধ
    • সংবাদ
    • উপসম্পাদকীয়
    • কবিতা ও গান
  • অডিও ও ভিডিও
    • বক্তব্য/ভাষণ/সাক্ষাৎকার
    • ডকুমেন্টারি ও সংবাদ
  • স্থির চিত্র
  • বিবিধ
  • বিশেষ
  • সামাজিক গণমাধ্যম
    • ফেসবুক
    • ইউটিউব
    • টুঁইটার

ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু

    Home বহুমাতৃকতায় বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু
    NextPrevious

    ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু

    By Zakir Hossain | বহুমাতৃকতায় বঙ্গবন্ধু | 0 comment | 6 September, 2020 | 0

    ১৯৪৭ সালে অখণ্ড ভারত ভাগ হয়ে জন্ম হলো দুটি দেশ—ভারত ও পাকিস্তান। ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতেই বাঙালির মোহভঙ্গ হয়! নবপ্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গনে রাষ্ট্রকাঠামোর ভেতরে শুরু থেকেই বাঙালিরা অপরিসীম বঞ্চনা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। নতুন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে নানা ধরনের বৈষম্য, অবহেলা স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করে। দেশের দুই অংশের ক্রীড়াঙ্গনে দুই বিপরীতমুখী কর্মসূচি অনুসরণ করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানিদের সঙ্গে সব সময় বিরূপ আচরণ করা হয়।

    পশ্চিম পাকিস্তানিরা প্রথম থেকেই কৌশলে ক্রীড়াঙ্গনকে তাদের কবজায় নিয়ে নেয়! তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালিরা যাতে তাদের মেধা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে। শোষক পাকিস্তানিরা শুরু থেকে ক্রীড়াঙ্গনে জবাবদিহি, মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে গ্রাহ্য করেনি। ক্রীড়াঙ্গন ঘিরে বাঙালির আকাঙ্ক্ষা, চিন্তা ও চেতনাকে তোয়াক্কা করেনি। পশ্চিম পাকিস্তানের তিন প্রদেশ থেকে পূর্ব বাংলার জনসংখ্যা বেশি। এই অঞ্চলের মানুষ ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে অনেক বেশি ক্রীড়াপিপাসু ও ক্রীড়ানুরাগী। তা সত্ত্বেও প্রতিটি খেলার জাতীয় ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের সদর দপ্তর স্থাপিত হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। এতে কেন্দ্রের ক্রীড়া বাজেট প্রতিবছর হাতিয়ে নিয়েছে পশ্চিমা সংগঠকরা বড় সহজে। পূর্ব পাকিস্তানের ইপিএসএফের ভাগ্যে জুটেছে খুব কম বরাদ্দ। সব খেলার পূর্ব পাকিস্তানের একটি শাখা সংস্থা ইপিএসএফ। পরিচিত ও জনপ্রিয় খেলার কোনো জাতীয় ফেডারেশনের প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানের কোনো প্রতিনিধির স্থান হয়নি। সবাই পশ্চিম পাকিস্তানি। ক্রীড়া ষড়যন্ত্রের কালো রাজনীতির শুরু যাত্রা থেকেই। পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গনে এমন কিছু মানুষ বড় বড় পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, যাঁরা স্বাধীন পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছেন! এতে অবশ্য বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। স্বয়ং লিয়াকত আলী খান ভারতবর্ষের লোক হয়েও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন! নবাব মাদোত পূর্ব পাঞ্জাবের লোক হয়েও পশ্চিম পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এদিকে পূর্ব বাংলার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নিবেদিত সংগঠক যাঁরা কলকাতা ও দেশের ক্রীড়াঙ্গনে দক্ষতা, বিচক্ষণতা ও অদূরদর্শিতার সঙ্গে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন, এই অভিজ্ঞ সংগঠকদের পশ্চিম পাকিস্তানিরা ভয় পেয়ে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছে। সারা পাকিস্তানের খেলাধুলা প্রথম থেকেই পাঞ্জাবিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

    ১৯৪৯ সালের ১ মে পাঞ্জাব, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও সিন্ধুর প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘দ্য বোর্ড অব কন্ট্রোল ইন পাকিস্তান’ স্থাপিত হয়। পূর্ব পাকিস্তান থেকে কোনো প্রতিনিধি বোর্ডে রাখা হয়নি। ক্রিকেট বোর্ডের প্রথম সভাপতি পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী খাঁ ইফতেখার হোসেন খান এবং অনারারি সেক্রেটারি করাচির কেআর কালেক্টর। প্রথম থেকেই ক্রিকেট চর্চা, সাংগঠনিক কার্যকলাপ, এমনকি বিদেশি দলের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক খেলা দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে। পাকিস্তানের দিনগুলোতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র সাতটি টেস্ট ম্যাচ। আর চট্টগ্রামে চার-পাঁচটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ! অথচ ঢাকার মাঠে টেস্ট ম্যাচ দেখার জন্য যত বেশি দর্শকের সমাগম হতো, পাকিস্তানের কোনো মাঠে তা কখনো হয়নি। ২৪ বছরে একজন বাঙালিও টেস্ট দলে স্থান পাননি। পূর্ব পাকিস্তান থেকে মিডিয়াম ফাস্ট বোলার অবাঙালি নিয়াজ আহমদ পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। পূর্ব পাকিস্তানের কিছু মানুষ লোভ ও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য বাঙালি খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্র করেছেন! বাঙালি খেলোয়াড়ের জাতীয় দলে স্থান হোক, এটা কেউ কেউ প্রকাশ্যে জোর দিয়ে চাইতেন না, পাছে পাকিস্তানিরা অসুখী হয়। বাঙালি হয়ে বাঙালির ক্ষতি করা হয়েছে।

    ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে শেখ মুজিবুর রহমান লিখেছেন, “আমাদের বাঙালির মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল আমরা মুসলমান, আর একটা হল আমরা বাঙালি। পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। বোধ হয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না, ‘পরশ্রীকাতরতা’। পরের স্ত্রী দেখে যে কাতর হয় তাকে পরশ্রীকাতর বলে। ঈষা, দ্বেষ সকল ভাষায়ই পাবেন, সকল জাতির মধ্যে কিছু কিছু আছে, কিন্তু বাঙালিদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা। ভাই, ভাইয়ের উন্নতি দেখে খুশি হয় না।” (পৃষ্ঠা ৪৭ ও ৪৮)

    ১৯৪৭ সালের ৫ ডিসেম্বর গঠিত হয়েছে পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশন। প্রথম কমিটির সবাই পশ্চিম পাকিস্তানি। অথচ তখন পূর্ব বাংলায় ফুটবল ছিল মাঠে মাঠে। ঢাকার ফুটবল লীগ ছিল রমরমা ও জমজমাট। ঢাকার বাইরে জেলা ও মহকুমা শহরে লীগ, শিল্ড ও টুর্নামেন্টের খেলা হতো নিয়মিত। পাকিস্তানিরা প্রথম থেকেই ভেবেছে ফুটবল বাঙালিদের মাথায় ছিল—এই খেলাটি তারা মাঠে ও মাঠের বাইরে ‘ডমিনেট’ করবে, ফুটবলে আছে বাঙালিদের একটি অতীত ঐতিহ্য!

    পাকিস্তানের জন্মের পর থেকে বাঙালিদের পাশাপাশি অবাঙালি খেলোয়াড়রা ঢাকার লীগে খেলতে শুরু করেন। অবাঙালি খেলোয়াড়দের সংখ্যা ফুটবল মাঠে ক্রমেই বেড়েছে। জীবিকার জন্য অবাঙালি খেলোয়াড়দের ঢাকার লীগে খেলা ছাড়া উপায় ছিল না। তখন তো পশ্চিম পাকিস্তানের ফুটবল পূর্ব পাকিস্তানের মতো জৌলুসপূর্ণ ও রমরমা ছিল না। ১৯৫০ সালে সাধারণ সভার মাধ্যমে পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনে পরিবর্তন আসে। খাজা শাহাবুদ্দিন প্রেসিডেন্ট এবং উইং কমান্ডার এইচ এ সুফি সম্পাদক মনোনীত হন। পূর্ব পাকিস্তান থেকে খাজা শাহাবুদ্দিন, খান এ সবুর প্রমুখ পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ‘প্যারটির’ ফুটবল থেকে বাঙালি ফুটবলাররা মুক্তি পাননি। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমা সংগঠকরা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছে, কখনো সংগঠক ও টেকনিক্যাল পারসনদের বিদেশ সফরের লোভ দেখিয়ে জাতীয় দলে যোগ্য বাঙালি খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। খেলোয়াড়ের সামর্থ্যকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এ ধরনের উদাহরণ ভূরি ভূরি আছে। আবার এমনও হয়েছে, খেলোয়াড়-স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বাঙালি সংগঠক অফিশিয়াল ‘ব্লেজার’ গায়ে চড়িয়ে দলের সঙ্গে বিদেশ সফরে যেতে রাজি হননি। কেউ কেউ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন, সেটি জোরালো না হলেও। পূর্ব পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানি কায়েমি স্বার্থবাদীরা বাঙালি ও অবাঙালি কর্মকর্তাদের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই এবং এক ধরনের অবিশ্বাস জিইয়ে রাখত! ক্রীড়াঙ্গনে বাঙালি খেলোয়াড় ও সংগঠকদের প্রতি অবহেলা, অবিচার, বঞ্চনা ও বৈষম্য সৃষ্টির প্রভাব পড়েছে খেলার মাঠে, খেলার বাইরে। জন্ম হয়েছে প্রাদেশিকতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো খেলায় একটি সময় গেছে রাজনৈতিক স্বাধিকার আন্দোলনে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়েছে। ২৪ বছরে মাত্র ২৫ জন (এর মধ্যে একজন সৈয়দ আবদুর রশিদ চুন্না, যিনি চুন্না রশিদ হিসেবে ফুটবল মাঠে পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন অবাঙালি) বাঙালি খেলোয়াড় পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলেছেন। বাঙালির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান দুঃখের সঙ্গে অনেকবার বলেছেন, ‘পাকিস্তান হওয়ার সাথে সাথে বাঙালিদের অবদান বড় তাড়াতাড়ি ভুলে গেছে পশ্চিম পাকিস্তানি কায়েমি স্বার্থবাদীরা।’

    ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সাঁতার ফেডারেশনের হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা হয় পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে, যেখানে নদী নেই। জাতীয় ফেডারেশনের প্রথম নির্বাহী কমিটিতে কোনো বাঙালির স্থান হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য অধিকার ও সমতাকে প্রথম থেকেই অস্বীকার করা হয়েছে। পশ্চিমারা প্রথম থেকেই ক্রীড়াঙ্গনে বৈষম্যের রাজনীতি টেনে এনেছে। নোংরা রাজনীতির মাধ্যমে চেষ্টা করেছে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাঁতারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চত্বর থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে। ১৯৫৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল অলিম্পিক। এই অলিম্পিকে সাঁতারে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে প্রথম হন সাঁতারু ব্রজেন দাশ। পাকিস্তানিরা এটা মেনে নিতে পারেনি। প্রচুর হৈচৈ হয়েছে। পরের দিন অবজারভার, দৈনিক আজাদ পত্রিকায় এটা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট বেরিয়েছে। আবার ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানেও ব্রজেন দাশ প্রথম হয়েছেন। ১৯৫৫ সালেও ব্রজেন দাশ ১০০ ও ৪০০ মিটারে স্বর্ণ জিতেছেন। তা সত্ত্বে মেলবোর্ন অলিম্পিকে (১৯৫৬) পাকিস্তান দলে তাঁকে নেওয়া হয়নি। ব্রজেন দাশ যে বাঙালি।

    ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে লাহোর গেমসে ফেব্রুয়ারির শীতে পূর্ব পাকিস্তান ক্রীড়া কন্টিনজেন্টকে ওয়াইএমসির খোলা মাঠে তাঁবুতে রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের দলগুলো ছিল ক্লাব ও আশপাশের হোটেলে। পূর্ব পাকিস্তানের ক্রীড়াবিদদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ। এই গেমসে পূর্ব পাকিস্তানের মহিলা অ্যাথলেট লুত্ফুন নেসা বকুল ৮০ মিটার হার্ডলসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টিসহ স্বর্ণপদক জেতেন।

    শেখ মুজিবুর রহমান শোষিত মানুষের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজনীতিতে শত ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও তাঁর ক্রীড়াপিপাসু মন কিন্তু সব সময় ক্রীড়াঙ্গনের সান্নিধ্যে ছিল। তিনি জানতেন কিভাবে পূর্ব পাকিস্তানিরা ক্রীড়াঙ্গনে অবহেলিত, বঞ্চিত, শোষিত ও বৈষম্যের শিকার। কিভাবে চলছে পূর্ব পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গন। এখানে কার এবং কাদের ইতিবাচক ও নেতিবাচক ভূমিকা। শেখ মুজিবুর রহমান ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে কথাকালে সব সময় বলতেন, আর্থিক অনুদান এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসান ছাড়া তো পূর্ব পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গনের মুক্তি নেই। ১৯৫৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে পরিচালিত আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তখন আলাদা কোনো ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রদেশ বা কেন্দ্রে ছিল না। তিনি দেখেছেন, ক্রীড়াঙ্গনে কিভাবে শোষণ করা হচ্ছে।

    ক্রীড়াঙ্গনে ন্যায্য আর্থিক অনুদান, পদে পদে বৈষম্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিদ্বেষ ক্রমেই বেড়েছে। বেড়েছে রাজনৈতিকসচেতনতা এবং রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, এমনকি কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাও জড়িয়ে পড়েন। পূর্ব পাকিস্তানের দাবির মুখে পশ্চিমারা বুঝতে পেরেছে, ক্রীড়াঙ্গনে বাঙালিরা জেগে উঠছে। আগামী দিনগুলো  হবে কঠিন।

    ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলসমূহের জাতীয় সম্মেলনের বিষয় নির্বাচনী কমিটিতে শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি পেশ করেন। প্রস্তাবিত ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। বৈষম্য আর শোষণের অবসানের আন্দোলন। বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার মধ্যে ছিল পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ক্রীড়াঙ্গনের আন্দোলন তো এই চেতনার মধ্যে নিহিত ছিল। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ছয় দফা দাবি পেশ এবং তা বাস্তবায়ন করার আন্দোলন জোরদার হওয়ায় ক্রীড়াঙ্গনে পশ্চিমারা একসময় অনেকটা নমনীয় হয়েছে। আর্থিক বরাদ্দ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে। ক্রীড়াঙ্গনের সার্বিক পরিবেশে এর প্রভাব ক্রমেই বেড়েছে। ফুটবলে যোগ্যতা থাকায় কয়েকজন বাঙালি খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেলেন।

    ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানকে সংবর্ধনা দেয়। লাখ লাখ ছাত্র-জনতার এই সংবর্ধনা সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসেন পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ সালে। আর তাঁর ভালোবাসার খেলার চত্বর ফুটবল মাঠে প্রথম আসেন ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালে, ঢাকা স্টেডিয়ামে। এরপর ঢাকা একাদশ বনাম কলকাতা মোহনবাগান একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী ম্যাচ দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা স্টেডিয়ামে এসেছেন ১৩ মে ১৯৭২ সালে। এ সময় তিনি উভয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ছবিও তুলেছেন। ১৯৭২ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন গঠিত হয়। প্রথম কমিটিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফুটবল সংগঠকদের অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব দেন। ১৯৭৪ সালের ১০ থেকে ১৫ জুন ফ্রাংকফুর্টে অনুষ্ঠিত ফিফা কংগ্রেসে বাংলাদেশ সদস্য পদ লাভ করে। এর আগেই ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯তম মারদেকা ফুটবলে অংশ নেয়। প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে জাতীয় ফুটবল দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে গেলে তিনি খেলোয়াড়দের স্বাধীন দেশে খেলাধুলার গুরুত্ব ও প্রয়োজন সম্পর্কে অবহিত করেন। বাংলাদেশ জাতীয় দল প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ২৬ জুলাই থাইল্যান্ডের বিপক্ষে মালয়েশিয়ায়।

    ইকরামউজ্জমান  : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক

    News Link: Daily Kalerkantho | ৩০ আগস্ট, ২০২০

     

    No tags.

    Zakir Hossain

    More posts by Zakir Hossain

    Leave a Comment

    Cancel reply

    You must be logged in to post a comment.

    NextPrevious

    বিভাগ

    • অডিও ও ভিডিও
      • ডকুমেন্টারি ও সংবাদ
      • বক্তব্য/ভাষণ/সাক্ষাৎকার
    • বই
    • বঙ্গবন্ধু
      • কারাজীবন
      • জন্ম ও বেড়ে ওঠা
      • পরিবার
        • এম এ ওয়াজেদ মিয়া
        • টিউলিপ সিদ্দিক
        • বঙ্গ মাতা
        • শেখ কামাল
        • শেখ জামাল
        • শেখ রাসেল
        • শেখ রেহানা
        • শেখ হাসিনা
        • সজীব ওয়াজেদ জয়
        • সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
      • বঙ্গবন্ধু বিরোধী ষড়যন্ত্র
      • বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড
      • বঙ্গবন্ধুর অর্জন ও স্বীকৃতি
      • বঙ্গবন্ধুর শাসনামল
        • অর্থনীতি
        • কৃষিক্ষেত্র
        • নবরাষ্ট্র পুনর্গঠন সংগ্রাম
        • পররাষ্ট্র নীতি
        • বাকশাল
        • বিবিধ
        • সামরিক ক্ষেত্র
        • স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
      • বাঙ্গালির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু
        • ১৯৭১
          • ২৫শে মার্চ
          • ৭ মার্চের ভাষণ
          • উত্তাল মার্চ
          • পাকিস্তান কারাগারে বঙ্গবন্ধু
          • মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু
          • স্বাধীনতার ঘোষণা
        • ৬ দফা আন্দোলন
        • ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান
        • ৭০ এর গণনির্বাচন
        • আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা
        • ভাষা আন্দোলন
      • বিষয়ভিত্তিক
        • বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও দর্শন
        • শিশুবন্ধু বঙ্গবন্ধু
      • ভাষণ
    • বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে প্রকাশনা
      • উপসম্পাদকীয়
      • কবিতা ও গান
      • রচনা ও নিবন্ধ
      • সংবাদ
    • বহুমাতৃকতায় বঙ্গবন্ধু
    • বিবিধ
    • বিশেষ
      • বঙ্গবন্ধুর দর্শন

    সাম্প্রতিক

    • 11 April, 2021
      0

      স্বাধীনতার ৫০ বছর: হক, ভাসানী, সোহরাওয়ার্দী আর মুজিব, যে চার নেতা বদলে দিলেন ভারত-ভাগ পরবর্তী পূর্ব বাংলার রাজনীতি

    • 11 April, 2021
      0

      স্বাধীনতার ৫০ বছর: শেখ মুজিব যেভাবে নেতা হয়ে ওঠেন, ছয় দফা ঘোষণা করে

    • 10 April, 2021
      0

      বঙ্গবন্ধুর ভাষা ও সাহিত্যচিন্তা

    • 10 April, 2021
      0

      ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু

    © এই পোর্টালে প্রকাশিত কন্টেন্ট সমূহের স্বত্ব সংশ্লিষ্ট লেখক বা প্রকাশক কর্তৃক সংরক্ষিত। 📧 BangaBandhuOnline@gmail.com
    • মূল পাতা
    • বঙ্গবন্ধু
      • এক নজরে
      • জন্ম ও বেড়ে ওঠা
      • মুক্তি সংগ্রামে
        • ভাষা আন্দোলন
        • ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬
        • আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ১৯৬৮
        • ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান
        • ১৯৭০ এর গণনির্বাচন
        • ১৯৭১
          • জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি
          • ২রা মার্চ
          • ৭ মার্চের ভাষণ
          • উত্তাল মার্চ
          • ২৫শে মার্চ
          • স্বাধীনতার ঘোষণা
          • মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু
          • পাকিস্তান কারাগারে বঙ্গবন্ধু
      • হত্যাকাণ্ড
      • শাসনামল
        • অর্থনীতি
        • কৃষিক্ষেত্র
        • স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
        • নবরাষ্ট্র পুনর্গঠন
        • অর্থনীতি
        • পররাষ্ট্র নীতি
        • সামরিক ক্ষেত্র
        • বাকশাল
        • বিবিধ
      • পরিবার
        • বঙ্গ মাতা
        • শেখ হাসিনা
        • শেখ কামাল
        • শেখ জামাল
        • শেখ রেহানা
        • শেখ রাসেল
        • এম এ ওয়াজেদ মিয়া
        • সজীব ওয়াজেদ জয়
        • সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
        • রাদোয়ান মুজিব সিদ্দিক
        • টিউলিপ সিদ্দিক
      • অর্জন ও স্বীকৃতি
      • ভাষণ
      • রচনা সমূহ
      • বঙ্গবন্ধু বিরোধী ষড়যন্ত্র
      • বিষয়ভিত্তিক
        • শিশুবন্ধু বঙ্গবন্ধু
        • বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও দর্শন
    • প্রকাশনা
      • গ্রন্থাবলি
      • রচনা ও নিবন্ধ
      • সংবাদ
      • উপসম্পাদকীয়
      • কবিতা ও গান
    • অডিও ও ভিডিও
      • বক্তব্য/ভাষণ/সাক্ষাৎকার
      • ডকুমেন্টারি ও সংবাদ
    • স্থির চিত্র
    • বিবিধ
    • বিশেষ
    • সামাজিক গণমাধ্যম
      • ফেসবুক
      • ইউটিউব
      • টুঁইটার
    Bangabandhu Online Archive