আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম অর্জন – শামসুজ্জামান খান
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : আমিনুর রহমান সুলতান
ফোকলোরবিদ ও বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সম্পদনায় প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা তিনটি গ্রন্থ অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীন। তিনটি বই-ই ব্যাপক পাঠকপ্রিয় ও সমাদৃত হয়েছে। বই তিনটি সম্পাদনার অভিজ্ঞতা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন আমিনুর রহমান সুলতান
আ. সু : আজ এসেছি মুজিববর্ষ উপলক্ষে আপনার সঙ্গে কথা বলতে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়াচীন গ্রন্থের সম্পাদনার সঙ্গে আপনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন, সে প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই। এ বছর প্রকাশিত হলো আমার দেখা নয়াচীন । আমরা আগের গ্রন্থ দুটি যখন পড়েছি, তখন দেখেছি ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন : অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সঙ্গে আমি ও বেবী মওদুদ পাণ্ডুলিপির সম্পাদনা, প্রুফ দেখা, টীকা লেখা, স্ক্যান ছবি নির্বাচন ইত্যাদি যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করি (অসমাপ্ত আত্মজীবনী)। কারাগারের রোজনামচার ভূমিকায় লিখেছেন : এই লেখাগুলো ছাপানোর জন্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে শামসুজ্জামান খান, বাংলা একাডেমির ডিজি সার্বক্ষণিক কষ্ট করেছেন। বারবার লেখাগুলো পড়ে প্রুফ দেখে দিয়েছেন। তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার পরামর্শ আমার জন্য অতি মূল্যবান ছিল। তার সহযোগিতা ছাড়া কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে সম্পাদনা প্রসঙ্গে আপনার নামটি এভাবে এসেছে। এই কাজের সঙ্গে আপনি কীভাবে যুক্ত হলেন?
শামসুজ্জামান খান: প্রধানমন্ত্রী ভূমিকা অংশে আমার কথা বিশেষভাবে লিখেছেন দুটো বইতেই। এরপর আমরা বঙ্গবন্ধুর তৃতীয় বইটিরও সম্পাদনা সম্পন্ন করেছি। সে বইটির নাম ‘আমার দেখা নয়াচীন’।
আ. সু: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থ দুটি লিখেছেন জেলে থাকার সময়। কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থটিতে তার জেলে থাকা সময়ের দিনলিপি পাওয়া যায়। এ বই দুটির পাণ্ডুলিপি আবিষ্কার, সংরক্ষণের ইতিহাস ও প্রকাশের যেসব অজানা তথ্য রয়েছে সে সম্পর্কে আপনার কাছ থেকে জানতে চাই।
শামসুজ্জামান খান: কীভাবে এই কাজের সঙ্গে আমি যুক্ত হলাম সে বিষয়টি দিয়েই শুরু করি। ২০০২ সালের শেষের দিকের কথা; বেবী মওদুদ (বর্তমানে প্রয়াত) সাংবাদিক ছিলেন, তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিশিষ্ট বন্ধু, আমাদের খুব প্রিয়ভাজন (মানে ছোট বোনের মতো। বেবী মওদুদ আমাকে বলল, জামান ভাই, বঙ্গবন্ধুর কিছু পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে, বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এটা নিয়ে কাজ করছেন, আমিও এ কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। মাননীয় শেখ হাসিনা চাইছেন এ কাজের সঙ্গে আপনিও যুক্ত হোন, যেহেতু আপনি ছাত্রলীগ করেছিলেন, শেখ ফজলুল হক মণির সঙ্গে আপনার কলেজজীবন থেকেই বন্ধুত্ব ছিল। আপনি আমাদের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক যে অবস্থা ও অবস্থান বেশ ভালো বুঝতে পারবেন। সে কারণে আমাদের সঙ্গে আপনিও যুক্ত হয়ে কাজ করলে ভালো হয়। আমি বললাম, বঙ্গবন্ধুর পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে, এটা তো আনন্দের কথা, সেই বইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করা গৌরবের বিষয়। এই সৌভাগ্য কজনের হয়?
আমি তার কাছে গেলাম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তখন বিরোধী দলের নেত্রী। প্রথম গিয়েছিলাম বিরোধী দলের নেতার সরকারি বাড়িতে, তিনি তখন সেখানে ছিলেন। এ বিষয়ে কথাবার্তা হলো। আমি সানন্দে রাজি হলাম। তিনি বললেন, ‘এই পাণ্ডুলিপি এত দিন পর পেয়ে আমরা দুই অসহায় বোন কান্নায় বুক ভাসিয়ে দিয়েছি। পরে ভেবে দেখেছি কান্না করে তো লাভ হবে না। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া এসব অতিমূল্যবান সম্পদ যদি তার উত্তরাধিকারী হিসেবে জাতির কাছে তুলে ধরতে না পারি, তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দিয়ে যেতে না পারি, তাহলে তো তা আমাদের দায়িত্বে অবহেলা বলে গণ্য হবে। সেজন্যই আমরা এ কাজটা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শুরু করেছি। প্রথমে আমরা দুই বোন শুরু করেছি, পরে আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও দায়িত্বশীল লেখক এবং ইতিহাসসচেতন সাংবাদিক বেবী মওদুদকে যুক্ত করেছি। কাজটির শুরুতে আমরা আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করি এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ; এর সামগ্রিকতা, ঐতিহাসিক পটভূমি এবং যথাযথভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য এ কাজে আমরা ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত করব। এজন্য আমরা বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সালাহউদ্দীন আহমেদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক শামসুল হুদা হারুনকে উপদেষ্টা করে কাজ শুরু করি। তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী শামসুল হুদা হারুন আমৃত্যু নিয়মিতভাবে আমাদের সম্পাদনা পরিষদের সভায় উপস্থিত থেকেছেন।
আমরা কাজটা জোরালো ও নিবিড়ভাবে করতে শুরু করলাম। ইতিমধ্যে বিরোধী দলনেতা শেখ হাসিনা যখন সুধাসদনে উঠে এলেন, তখন কাজ গতি পেল। কাজের শুরুতে আমরা পাণ্ডুলিপি কীভাবে পাওয়া গেল জানতে চাইলাম।
আ. সু: মানে পাণ্ডুলিপি উদ্ধারের ইতিহাস বা ঘটনাটা জানতে চাইলেন?
শামসুজ্জামান খান: হ্যাঁ। পাণ্ডুলিপি উদ্ধারের ইতিহাস দুই পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বের উদ্ধারের ইতিহাস হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে ধানমণ্ডির ১৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি কিংবা সামান্য কিছুকাল আগে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কিছু লোক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কাছে এসে বলে, বাচ্চু লোগো কো সুকুল মে পাঠাও, মানে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাও। ওরা স্কুলকে, সুকুল বলে। উনি ভাবতে লাগলেন হঠাৎ কেন ওরা এটা বলছে? তো রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি তো জানেন, রেডিওতে শুনেছেন, পত্রিকাতেও দেখেছেন, পাকিস্তানিরা বলতে চাইছে এখানে আর কোনো সমস্যা নেই, স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজমান। তো স্বাভাবিক অবস্থা দেখানোর জন্য তো স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত এগুলো চালু দেখাতে হয়। আর এজন্যই বেগম মুজিবের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর তাগিদ দিচ্ছিল। বেগম মুজিব রাজনীতিসচেতন তীক্ষè বুদ্ধির মানুষ ছিলেন। তার প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ছিল চমৎকার। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ভাবলেন জেলখানায় থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু আত্মজীবনী লেখা শুরু করেছিলেন এবং তার তিন-চারখানা ছোট ছোট এক্সারসাইজ বুক বত্রিশ নম্বর বাড়িতে একটা আলমারির মাথার ওপর রাখা আছে।
আ. সু: ওখানে থেকে গেলে তো খাতাগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত।
শামসুজ্জামান খান: হ্যাঁ, আলমারির ওপরে থেকে গেলে তো তাই হতো। তখন বেগম মুজিব বললেন যে, সুকুল মে বাচ্চাদের যে পাঠাব বই তো নেই, বই রয়েছে বত্রিশ নম্বর বাড়িতে। তখন ওরা বলল, লেআও ওধারছে। ওখান থেকে নিয়ে আসো, অসুবিধার কী? বেগম মুজিব নিজে গেলেন না, তার বড় মেয়ে শেখ হাসিনাকে পাঠালেন। শেখ হাসিনা সে সময় বই আনার জন্য বত্রিশ নম্বরে গেলেন, অতি সাবধানে বইয়ের সঙ্গে সেই খাতাগুলোও কৌশল করে তিনি নিয়ে আসেন ওখান থেকে। এভাবেই বেগম মুজিবের হাতে প্রথমে চারটা খাতা আসে।
আ. সু: অর্থাৎ এই খাতাগুলো উদ্ধারে শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। হ্যাঁ, তিনি সাহসিকতার সঙ্গে সুকৌশলে দখলদার সেনাদের চোখ এড়িয়ে খাতাগুলো নিয়ে আসেন।
শামসুজ্জামান খান: খাতাগুলো নিয়ে আসার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা ও বেগম মুজিব দুজনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বেগম মুজিব জানতেন খাতাগুলো কোথায় আছে এবং এক অস্বাভাবিক জীবন-মরণ অবস্থায়ও তিনি খাতাগুলোর কথাই বিশেষ করে ভেবেছেন এবং তিনিই বললেন খাতাগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসার জন্য; নয়তো জানাই যেত না বঙ্গবন্ধুর এই অমূল্য পাণ্ডুলিপি রয়েছে। বেগম মুজিব এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করলেন, কারণ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে হয়তো আঁচ করে থাকতে পারে। অতএব, তিনি ভাবলেন খাতাগুলো তার অবরুদ্ধ বাসায় তীক্ষè নজরদারির মধ্যে রাখাটা ঠিক হবে না। তখন হাসপাতালে ছিলেন শেখ ফজলুল হক মণির কোনো আত্মীয়, বেগম মুজিব তাদের সঙ্গে কথা বললেন। তখন আরামবাগে থাকতেন শেখ মণির মা এবং তাদের পরিবার। তাই পা-ুলিপিগুলো তাদের বাড়িতে রাখা হলো এক অদ্ভুত কৌশলে। ঘরের বারান্দার ভেতরের ছাদের সঙ্গে ঝোলানো শিকায় মাটির পাত্রের ভেতরে লুকানো অবস্থায়। আর তার ওপর একটা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, যাতে কেউ বুঝতে না পারে।
আ. সু: ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর জীবনবিনাশী ত্রাসের মধ্যেও পাণ্ডুলিপি রক্ষা করা কীভাবে সম্ভব হয়?
শামসুজ্জামান খান: বেগম মুজিব, শেখ হাসিনা ও শেখ মণির পরিবারের দুঃসাহসিকতায় এটা সম্ভব হয়।
আ. সু: এ তো গেল স্বাধীনতা-পূর্বকালে প্রথম পর্বের পাণ্ডুলিপি উদ্ধারের ইতিহাস। স্বাধীনতা-উত্তরকালের দ্বিতীয় পর্বের কথা বলুন।
শামসুজ্জামান খান: স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে গণভবনে দুপুরের খাবারের পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু যখন বিশ্রাম নিতেন, তখন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী এবং তোয়াব খান তার জীবন কথা রেকর্ড করতেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে সামরিক বাহিনীর কিছু দেশদ্রোহী কর্মকর্তা তাদের দেশি-বিদেশি শত্রুপক্ষের যোগসাজশে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর যে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়, তাতে বঙ্গবন্ধু লেখাপত্রের পাণ্ডুলিপি বিষয়টি সাময়িকভাবে চাপা পড়ে যায়।
বঙ্গভবনের তোশাখানায় পাওয়া যায় দুটি সুটকেসে রাখা দুটি টেপ। সম্ভবত এ দুটি টেপ গণভবনে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তোয়াব খানকে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎকারের টেপ। একটা পাণ্ডুলিপি প্রধানমন্ত্রী অদ্ভুতভাবে পেয়েছিলেন একজন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ঘনিষ্ঠজনের কাছ থেকে। প্রচণ্ড ধুলার স্তূপ থেকে এক নারী পুলিশকর্মী এটি উদ্ধার করেন। এ পাণ্ডুলিপিতে পুলিশের ঘুষ খাওয়ার কথা থাকায় এই পাণ্ডুলিপি গোপন স্থানে ফেলে রাখে। সবশেষে, শেখ মণির ভাই শেখ মারুফের কাছ থেকে উদ্ধার হয় অসমাপ্ত আত্মজীবনীর পাণ্ডুলিপি। সম্ভবত শেখ মণি এটি ছাপার জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে নিয়ে থাকবেন। এই হলো পাণ্ডুলিপি উদ্ধারের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর এই অমূল্য পাণ্ডুলিপিগুলো পাওয়া গেছে, এটা জাতির জন্য সৌভাগ্য।
২০০০ সাল থেকেই বলতে গেলে, শেখ হাসিনা ভাবলেন এগুলো প্রকাশ করা দরকার। তার পরের বাকি ইতিহাস তো বলেছি, যেভাবে সম্পাদনা পরিষদ গড়ে তোলা হলো ও কাজ করা হলো। সার্বিকভাবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে থাকলেন। এই পাণ্ডুলিপিগুলো যখন এডিটিংয়ের পর্যায়ে এলো, তখন আমরা কাজ শুরু করলাম। ছেঁড়া কাগজ, লেখা বোঝা যায় না, ভগ্ন অবস্থায় পাণ্ডুলিপি থেকে সেগুলো টাইপ করা হলো। তিনি পাণ্ডুলিপিগুলো যত্নের সঙ্গে টাইপ করার ব্যবস্থা করলেন, কখনো নিজেও টাইপ করলেন।
আ. সু: সম্পাদনার প্রক্রিয়া কেমন ছিল?
শামসুজ্জামান খান: সাধারণত পাণ্ডুলিপি যেভাবে এডিট করা হয়, সেগুলো সেভাবেই বানান ঠিক করা হয়েছিল। একই বানানের মধ্যে যদি বৈষম্য থাকে, সেটা ঠিক করা। অর্থাৎ একেক জায়গায় একেকভাবে যদি বানান লেখা থাকে, সেটাকে কোনো একটি নির্দিষ্টভাবে লেখা।
অথবা কিছু লেখা বা বাক্য তিনি তাড়াহুড়ো করে লিখেছেন সেখানে ‘না’ হবে সেই ‘না’-এর জায়গায় দন্তন্য-এর (-া) আকারটা পড়েনি, এগুলো ঠিক করাই হলো এডিটিংয়ের কাজ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাক্যের ছোটখাটো সম্পাদনা করতে হয়েছে।
আমরা যেসব পৃষ্ঠার এডিট সম্পন্ন করি, সেগুলো তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাইপ করান এবং তিনি নিজের হাতেও কিছু টাইপ করেছিলেন। এগুলো তার বাবার পাণ্ডুলিপি, সেজন্য যত্নটা ছিল একটু বেশি। যাতে কোনোভাবে কোনো ধরনের অসামঞ্জস্য তৈরি না হয়, তা নিয়ে তিনি সতর্ক ছিলেন।
আ. সু: তিনি নিজেও একজন লেখক, সাহিত্যের প্রতি তার অসম্ভব ভালোবাসা রয়েছে। তার লেখক পরিচয়টাও আমরা জানি।
শামসুজ্জামান খান: হ্যাঁ, বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী হিসেবে তার মধ্যে সাহিত্যের একটা বিশেষ বোধ আছে। মজার ব্যাপার হলো, আমরা যখন এই কাজ করি, ঢাকা বিসশবিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক যারা কিছুটা বঙ্গবন্ধুবিরোধী বলতে গেলে, তারা আমাদের কখনো কখনো বলতেন এটা আপনারা কী তৈরি করছেন?
আ. সু: মানে হাসিঠাট্টা করতেন?
শামসুজ্জামান খান: ঠিক হাসিঠাট্টার মতোই। তবে মজার ব্যাপার হলো, প্রথম খণ্ড প্রকাশের পর তারা বললেন, আমরা তো ওই সময় সমালোচনা করেছিলাম কিন্তু এখন দেখছি এ লেখা শেখ মুজিব ছাড়া অন্য কারোর পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। এটা পড়েই তা বোঝা যায়, শেখ মুজিবের ব্যক্তিত্ব এবং সে সময়ের ঘটনাপ্রবাহ, কথা বলার ধরন ও তার বৈশিষ্ট্য পুরো বিষয়টি এ বইতে এসেছে, যাই হোক এসবের মধ্যেই আমরা কাজ করতে শুরু করি। একসময় প্রথম খণ্ডটা শেষ করলাম, সে বইটার নাম অসমাপ্ত আত্মজীবনী। অসমাপ্ত আত্মজীবনী যখন শেষ করলাম, ইতিমধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলো। নেত্রী গ্রেপ্তার হলেন। বইয়ের পাণ্ডুলিপি নিয়ে সতর্কতার কারণে বেবী মওদুদ পাণ্ডুলিপি আমার শ্যামলীর বাড়িতে রাখলেন। এখানেই বেবী আসতেন। আমরা সম্পাদনার কাজ করতাম। আমি তো বলেছি ২০০২ সালের শেষ থেকে কাজ শুরু করেছি, তবে আমি কাজটা ২০০৩ সাল থেকে চূড়ান্তভাবে শুরু করেছি। আর শেখ হাসিনা ২০০০ সালের শেষ থেকেই কাজ শুরু করেছেন। আমরা প্রথম বইটা প্রকাশ করলাম ২০১২ সালে। এ বইয়ের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে আমরা যথেষ্ট পরিমাণ সময় নিয়েছি ও কাজ সুসম্পন্ন করেছি।
আ. সু: এ কাজে তাই এক যুগ সময় লেগে গেল।
শামসুজ্জামান খান: হ্যাঁ, এক যুগ লেগেছে। প্রথম বইটার ব্যাপারে অতিসতর্ক ছিলাম যেন কোথাও কোনো ত্রুটি না হয়। সেজন্য যত্নের সঙ্গে আমরা এটা সম্পাদনা করে, প্রুফ দেখে বানানে যত দূর সম্ভব সংহতি রক্ষা করে প্রকাশ করেছি এবং আমরা খুশি হয়েছিলাম বইটা প্রকাশের পর তেমন কোনো সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়নি, বরং প্রত্যেকেই প্রশংসা করেছেন। প্রথম বইটা প্রকাশের পর তুমুল সাড়া পাওয়া গেল। আসলে মানুষ ভাবতেই পারেনি বঙ্গবন্ধুর লেখালেখির এমন অসাধারণ দক্ষতা ছিল।
আ. সু: অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি প্রকাশের পর বঙ্গবন্ধুকে মানুষ নতুন করে আবিষ্কার করল।
শামসুজ্জামান খান: হ্যাঁ, তিনি রাজনীতিতে যেমন নজিরবিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন, লেখার ক্ষেত্রেও তেমনি অসামান্য ছাপ রেখেছেন। তিনি বেঁচে ছিলেন মাত্র ৫৫ বছর। বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। তারপরও এত যত্ন ও নিষ্ঠায় ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সাহিত্যগুণসম্পন্ন যে অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ আরও তিন-চারখানা বই লিখে গেছেন, তাতে আমরা নতুন এক বঙ্গবন্ধুকে পেলাম। রাজনীতির সঙ্গে লেখক সত্তায় নতুন মাত্রা যুক্ত হওয়ায় রাষ্ট্রনির্মাতা ও সাহিত্য স্রষ্টার সম্মিলনে বঙ্গবন্ধুর মহত্ত্ব অন্যরকম উচ্চতায় স্থিত হলো।
আ. সু: লেখক বঙ্গবন্ধু এবং তার বইয়ের অনুবাদ প্রসঙ্গ…
শামসুজ্জামান খান: বঙ্গবন্ধুর বই প্রকাশ করার সঙ্গে অনুবাদের বিষয়ও স্থির করা হলো। প্রথম অনুবাদটা শামসুল হুদা হারুন সাহেব করেছিলেন। তার অনুবাদটা ক্ল্যাসিক্যাল ঢঙের ছিল। অনেকেই বলল যে, এখনকার ইংরেজি তো একটু অন্যরকম, সহজ, ঘরোয়া কখনো একটু মজলিশি ধরনের, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিতার স্বাদযুক্ত। তো অনুবাদটা সেভাবে করলে ভালো হয়। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির সাহিত্যের অধ্যাপক ও অনুবাদক ফকরুল আলমকে অনুরোধ করা হলো, তিনি অনুবাদের কাজটা করলেন। তারপর ২০১২ সালে বইটা ইংরেজিতেও প্রকাশ পেল। এই হলো প্রথম বইটির ইতিহাস। বই প্রকাশের পর প্রকাশনা উৎসব হলো, উৎসবটাও ছিল খুবই আড়ম্বরপূর্ণ। অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি প্রকাশের জন্য দেওয়া হয়েছিল ইউপিএল প্রকাশনীর মহিউদ্দিন আহমদকে। তারা মোটামুটি যত্নের সঙ্গে বইটি প্রকাশ করেছিলেন। আমাদের জানামতে ইংরেজ আমল ও পাকিস্তান আমলে বাঙালি মুসলমানের লেখা সর্বাধিক বিক্রীত বই ছিল মীর মশাররফ হোসেনের ‘বিষাদ-সিন্ধু’ ও মোহাম্মদ নজিয়র রহমানের ‘আনোয়ারা’। সেসব রেকর্ড এখন ভেঙে ফেলেছে বঙ্গবন্ধুর বই। বই বিক্রির ক্ষেত্রে পূর্ববাংলা তথা বাংলাদেশের আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে এই বইটি। বঙ্গবন্ধুর লেখা বই তুমুল গ্রহণযোগ্যতা পায় পুরো জাতির কাছে। এরপর আমরা যে পাণ্ডুলিপিটি হাতে পেলাম, সেটি হলো কারাগারের রোজনামচা। বঙ্গবন্ধুর নির্মোহ বিবরণে কারাগারের কথাই থাকে, আশপাশের লোকজনের কথাই উঠে আসে। কারাসাহিত্য আমরা যতটা পড়েছি বঙ্গবন্ধুর মতো এতটা অনুপুঙ্খভাবে অন্য কোনো বইয়ে পাইনি। এ বইয়ে দেখা যায় রাজবন্দি ছাড়াও তিনি সাধারণ কয়েদিদের খোঁজখবর নিচ্ছেন নিবিড় অনুসন্ধিৎসায়। বিভিন্ন দাগি আসামির কথা তাদের জীবন কেন এমন হলো, সেটা যত্ন ও সংবেদনশীলতায় দেখার প্রয়াসও রয়েছে লেখায়। কখনো পকেটমারের, কখনো গোয়েন্দা বাহিনীর লোকরা অপরাধীদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে কিছু টাকা-পয়সা এদিক-সেদিক করে ভাগাভাগির মাধ্যমে কীভাবে দুষ্কর্মগুলো সেরে নেয়, সে কথা। আবার কারাগারে ভুক্তভোগীর একাকিত্ব, নিঃসঙ্গতা, অসহায়ত্ব, পরিবার বিচ্ছিন্নতার মানসিক, মনস্তাত্ত্বিক বেদনা। এই বই হয়ে ওঠে পূর্ববাংলার নির্যাতিত মানুষের কারা নির্যাতনের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু শুধু তার নিজের কারা নির্যাতনের কথা বলেননি, পূর্ববাংলার নানা শ্রেণি-পেশার ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্যাতনের কথা তার বইয়ে বাক্সময় করে তুলেছেন।
আ. সু: তা ছাড়া জেলখানার পরিবেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি।
শামসুজ্জামান খান: পরিবেশ বলতে কারাগারের ভেতরের খুঁটিনাটি বিষয় রয়েছে। কখনো সেটি রহস্যময়, কখনো সেটি হাসির উদ্রেক করে, কখনো নিষ্ঠুরতার চরম উদাহরণ। এসব বিষয়কে এতটা বাস্তবধর্মী করে এতটা একনিষ্ঠভাবে তিনি তুলে এনেছেন, যা ভেবে বিস্মিত হতে হয়। কারাগারের ইতিহাসের নানা টেকনিক্যাল পরিভাষা যেমন দফা, যেমন কেষ্টাকল, শয়তানের কল, জলভরি দফা, বন্দুক দফা, ডালচাকি দফা, ছোকরা দফা ইত্যাদি তার বইকে দিয়েছে এক অনন্যতা। এসব অদ্ভুত, বিচিত্র দফার কথা আমরা আগে কেউ জানতাম না এবং এসব দফা বাংলাদেশের জেলেই উদ্ভাবিত। কোনো কোনো দফা নিয়ে হাসি পায়, কোনো কোনো দফা পড়লে মনে হয় কীসব কিম্ভূতকিমাকার ব্যাপার জেলের ভেতরে। আবার ওখানে পাগলদের জন্য যে সেল রয়েছে, সেটার বর্ণনাও দিয়েছেন। তাদের যে চিৎকার, উদ্ভট আচরণ, নানা অদ্ভুত, তবে কাণ্ডকারখানা লেখক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কখনো মানবিক চেতনায় কখনো মৃদু রসিকতায়। কখনো তাদের জন্য দুঃখ পেয়েছেন। কখনো পাগলদের সেলের পাশেই তার সেল নির্ধারণ করা হয়েছে, ঘুমের কষ্ট হয়েছে ইত্যাদি তিনি যেমন তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে তার পালিত একটা মোরগের কথা আছে। মোরগটা যখন হাঁটছে, তখন তা মনে হয়েছে মোরগটা এক রাজকীয় ভঙ্গিতে গৌরবের সঙ্গে ঝুঁটি ফুলিয়ে বীরের মতো হেঁটে যাচ্ছে। তার নির্জন সেলের পাশেই ছিল গাছ, সেই গাছে হলুদ পাখি বসত। দুটো হলুদ পাখি প্রতিদিন দেখে তিনি আনন্দিত হতেন। পশু-পাখির প্রতি তার যে প্রেম-ভালোবাসা, এটিও চমৎকারভাবে তার লেখায় উঠে এসেছে। এ ছাড়া তিনি বাগান করতে ভালোবাসতেন, ফুলের গাছ লাগাতেন। এতে তার প্রকৃতি গাছপালা, পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায়।
আ. সু: মানবিক মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে বলতে পারি।
শামসুজ্জামান খান: আবার কখনো দেখা যাচ্ছে, একটা গেছো গিরগিটির সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছে দাঁড়কাকের, সেখানে তিনি সামরিক শাসকদের সঙ্গে সাধারণ মানুষদের তুলনা করেছেন। এসব মিলিয়ে কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থ তিনি রাজনীতির সমাজের, দুঃশাসন ও স্বৈরাচারের নানা রকম ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন।
আ. সু: বলতে হয় অসাধারণ এক কারাসাহিত্য। আপনি বঙ্গবন্ধুর আরও একটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। সে সম্পর্কে বলুন।
শামসুজ্জামান খান হ্যাঁ, অপর যে বইটি প্রকাশিত হলো এ বছরের বইমেলায়, তা হলো আমার দেখা নয়াচীন। বঙ্গবন্ধু এই বইটির নাম দিয়েছিলেন ‘নয়াচীন’। প্রথমদিকে চিন্তা করা হয়েছিল এই বইটির নাম রাখা হবে ‘চীন-ভ্রমণ’। আমি তখন বলেছিলাম, একটি নতুন অভিধা সমাজতান্ত্রিক কাঠামোতে গড়া নতুন রাষ্ট্র, তাকে এই ভ্রমণ শিরোনামে আমলে এর যে গভীরতা বহন করে, তা এই নামটিতে অনুপস্থিত। কারণ, অনেকেই তো চীন ভ্রমণ করে, তাদের উদ্দেশ্য আনন্দ লাভের জন্য। তাই ‘চীন-ভ্রমণ’ নামটি এটা খুবই সাধারণ শোনায়। অন্য পর্যটকদের মতো তো বঙ্গবন্ধু আনন্দ ভ্রমণের জন্য যাননি। নয়াচীন হলো একটি নব্যরাষ্ট্রব্যবস্থা। যেখানে সমাজতান্ত্রিক নেতা মাওসেতুংয়ের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা লংমার্চ করেছে, লড়াই করেছে। জানা যায়, শেষ পর্যন্ত তারা ক্ষুধার কারণে বেল্টের চামড়া খেয়ে জীবন ধারণ করেছে, তারা লড়াই-সংগ্রাম করে একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, যা একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। অতএব, সে রাষ্ট্রটা কী রকম তা দেখার জন্য, এর ইতিহাস জানার জন্য, সেখানে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে, রাজনৈতিক এই যে পাটপরিবর্তন তা সে দেশের জনগণের জন্য সত্যিকার অর্থে কল্যাণকর কি না এসব দেখার জন্য তিনি সেখানে গিয়েছেন। তিনি অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে চীনের সব বিষয়কে পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করেছেন। অর্থাৎ এটি অসাধারণ এক রচনা এবং সেই চীন ভ্রমণে পাকিস্তানের পঁচিশজনের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে শান্তিসম্মেলনে গিয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান থেকে সে দলে ছিলেন তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।
আ. সু: তিনি কত সালে চীন ভ্রমণে যান?
শামসুজ্জামান খান: সময়টা ১৯৫২, সেপ্টেম্বর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আতাউর রহমান খান, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, খন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস আর গিয়েছিলেন উর্দু কবি ইউসুফ হাসান। ওখানে গিয়ে তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নয়াচীনের সমাজব্যবস্থা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা এ ছাড়া ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থা, সব বিষয় তিনি দেখতে চেয়েছেন। আমি বাংলা একাডেমিতে থাকাকালেই প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, বইটি বাংলা একাডেমিকে দেওয়ার জন্য। আমি মহাপরিচালক পদে থাকি বা না থাকি, বইটি যেন এখান থেকেই প্রকাশ হয়। কারণ, বাংলা একাডেমি আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান, আমাদের জাতির পিতার বই সেটা বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশ হওয়াই ভালো এবং তিনি আমার কথা রেখেছেন, বইটি বাংলা একাডেমি থেকেই প্রকাশ পাচ্ছে। এখানে আরেকটি কথা বলি, কারাগারের রোজনামচা বইটি বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশ করার পর সেটা অতিদ্রুত পাঠকের কাছে বিপুল সাড়া পায়। বাংলা একাডেমির বই বিক্রির ইতিহাসে কারাগারের রোজনামচা নতুন রেকর্ড অর্জন করে।
আ. সু: বঙ্গবন্ধুর বই প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করার ক্ষেত্রের আপনার অনুভূতি কী?
শামসুজ্জামান খান: আমি আনন্দিত, আমি অভিভূত। জাতির পিতার এই অমূল্য পাণ্ডুলিপি বই আকারে প্রকাশের কাজে যুক্ত থাকতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। বঙ্গবন্ধুর তিনটি বই সম্পাদনের আনন্দ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম সম্পদ।
শামসুজ্জামান খান
প্রকাশিত: দেশরূপান্তর