বঙ্গবন্ধু মুচলেকা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব গ্রহণ করেননি

সম্পাদনা/লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে। এছাড়া নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুকে জানতে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। এজন্য বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়াচীন বইগুলো নিয়মিত পড়তে হবে। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) ভোরের পাতা সংলাপে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন।
ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমি সৌভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের বাস্তবায়ন কমিটিতে আমাকে শেখ হাসিনা রেখেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিয়ে একটি বিশদ লেখাও লিখেছি এবার। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই আন্দোলন সংগ্রামে ভাষা আন্দোলন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। এরপর নেতৃত্বে চলে আসেন। এরপর তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর অনেকেই মুচলেকা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব ফিরে পেয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মুচলেকা দেননি। ১৯৪৮ থেকে ৫১ পর্যন্ত ১১ মার্চ ভাষা দিবস হিসাবে পালিত হলেও ৫২ এর পর ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ভাষা শহীদ দিবস পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধু কারাগারে বসেই আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হন। ৬৬ এর ছয় দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গণ আন্দোলন, ৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। এরপর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার ডাকেই বাঙালি ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে স্বাধীনতা এনেছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। তাইতো আমি কবিতায় লিখেছি, ‘মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি।’ আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আগামী ৬ সেপ্টেম্বরে সম্মানসূচক পিএইডি দেয়ার দাবি তুলেছি। এটা কার্যকর করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর ওপর বই প্রকাশ করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে দেখা যায়, তিনি কতবড় দার্শনিক ছিলেন। এমন মহান নেতার প্রতি আমাদের সম্মান জানাতেই হবে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা এদেশে এসেছিলেন। সেদিন আমি এবং অসীম কুমার উকিল এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম। বাঞ্জা বিক্ষুদ্ধ সময়ে তিনি এসে শুধু বলেছিলেন, আমি আমার পিতার অসামপ্ত কাজগুলো করতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। আমি নতুন প্রজন্মকে শুধু বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন বইগুলো পড়তে হবে। বঙ্গবন্ধুর ওপর নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে। ৭৫ এর পর ৯৬ পর্যন্ত ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। সেসময় টিকে থাকাই ছিল কষ্টের কাজ। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিই করতে পারি নাই। বিসিএস দিয়ে সরকারি কলেজে চাকরি করতে হয়েছে। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির বিষয় না। তিনি আরো অনেক বিস্তৃত।
ড. মুহাম্মদ সামাদ
দৈনিক ভোরের পাতা , ২ জুলাই, ২০২০, লিঙ্ক

আরও পড়ুন